বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা – 500 শব্দের বাংলা রচনা

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা প্রাককথন: প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ কতগুলি অতিপ্রাকৃত ও অপ্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাসী। এই বিশ্বাস যুক্তিতর্ক নির্ভর নয়। নিতান্তই মানুষের অজ্ঞতার পরিচয়, মানুষ দীর্ঘদিন কোন বিশ্বাসকে মনের মধ্যে লালন করতে থাকলে একসময় সেই বিশ্বাস পরিণত হয় সংস্কারে। সংস্কার যখন প্রগতিশীল, বিরোধী রূপে চিহ্নিত হয়, তখন তাকে বলে কুসংস্কার। সুতরাং যে সমস্ত প্রথা, আচার-আচরণ, বিশ্বাস সংস্কার মানুষকে যুক্তিহীন অস্বাভাবিক ক্রিয়াকর্মের লিপ্ত থাকতে উৎসাহিত করে, তাদেরকে কুসংস্কারের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়। 

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার এর পার্থক্য

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ । বিজ্ঞানমঞ্চ সারা দেশ প্রচার অভিযান চালাচ্ছে মানুষ কিভাবে সংস্কার মুক্ত হতে পারে। কিন্তু সংস্কারমুক্ত হতে চাইলে প্রথম যার প্রয়োজন, তা হল সর্বজনীন শিক্ষার বিস্তৃতি। কারণ সুশিক্ষা মানুষকে আত্মনির্ভরশীল করে। বিজ্ঞান মানুষকে মুক্ত করে, পরক্ষনেই কুসংস্কার মানুষকে বন্দি করে। তাই বিজ্ঞানের সঙ্গে কুসংস্কারে পার্থক্য অনেকটা সতীন সম্পর্কের মত। যে যেখানে বিজ্ঞানের আলো যত পরিস্কার, সেখানে কুসংস্কারের কুয়াশা ততখানি অসচ্ছ।

কুসংস্কারের দৃষ্টান্ত

প্রাত্যহিক জীবনে হাজারো তার কুসংস্কার রয়েছে। বড়ু চন্ডীদাসের ‘ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে রয়েছে, রাধা গৃহ থেকে বের হওয়ার সময় হাসি উঠেছিল এবং মাথার উপর দিয়ে টিকটিকি গিয়েছিল বলে তার দিনটা অশুভ গেল। শুধু মধ্যযুগী নয়, আধুনিক জীবনে কৃষি, ধর্ম, যাত্রাপথ বর্নন ইত্যাদি প্রসঙ্গে কুসংস্কার আছে। যেমন,- 

(ক) শিকারির পক্ষে গো-সাপ দর্শন অশুভ।

(খ) ১৩ সংখ্যা অশুভ। যদিও রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান ।

(গ) সাপে কাটা মানুষকে ঝাড়ফুঁক করা ইত্যাদি ।

কুসংস্কার দূরীকরণে বিজ্ঞান

কুসংস্কার ব্যক্তির পক্ষে অহিতকর, প্রগতিবিরোধী। মানুষের যুক্তিবোধ কে নষ্ট করে কুসংস্কার। কুসংস্কার দূরীকরণে আমাদের কতগুলি কর্মসূচি নিতে হবে যেমন – (অ) যুক্তিনিষ্ঠ হতে হবে, (আ) বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মসূচি বাড়াতে হবে, (ই) শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠান প্রচার করতে হবে,(ঈ) বিজ্ঞান চেতনার প্রসার ঘটাতে হবে ।

সংস্কার ও কুসংস্কার (দ্বন্দ্ব ও পরিনাম)

সংস্কার শব্দটি দুটি অর্থ বহন করে (১) প্রচলিত আচার, প্রথা, বিশ্বাসের প্রতি নির্ভরতা।(২) প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে প্রগতিশীল আন্দোলন এবং নতুন ঐতিহ্য সৃষ্টি । ‘সংস্কার’ শব্দটি যখন প্রথম অর্থে ব্যবহৃত, তখন তা যুক্তি, বুদ্ধি, বিজ্ঞান চেতনার আলোকে সিঞ্চিত হয়ে নতুন প্রজ্ঞার পথে মানবমনকে পরিচালিত করে। দ্বিতীয় পথে বিপ্লব সূচিত হয়। পরিবর্তনের পথে এগিয়ে চলে বন্ধ্যা ও ক্ষয়িষ্ণু সমাজ। আদি মধ্যযুগের প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন ‘শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’ এ এই কুসংস্কারের পরিচয় পাওয়া যায়।

কুসংস্কারে বন্দি মানব মন

নগর সভ্যতার বিজ্ঞান পুষ্ট মানুষ যখন কুসংস্কারের শিকার হয়, তখন নগর জীবনের বাইরে শত শত কিলোমিটার দূরের পল্লী জীবন যে সংস্কারের কালো পর্দার মধ্যে বাস করবে এটা স্বাভাবিক। যে ডাক্তার আঙ্গুলের রত্ন ধারণ করে শল্যচিকিৎসা করছেন তিনিতো কুসংস্কারের সবচেয়ে বড় প্রচারক। শুধুমাত্র শিক্ষার প্রদীপ জ্বালিয়ে কুসংস্কারের অন্ধকার দূর করা যাবে না। মানুষের অজ্ঞতাই কুসংস্কারের একমাত্র মৃত্যুবীজ নয়, সুতরাং আমাদের সিদ্ধান্ত – (ক) দুর্বল দেহ, রোগী আচ্ছন্ন মন ও বলিষ্ঠতার অভাবের কারণে কুসংস্কারের জন্ম নেয়। (খ) সঠিক ধর্মীয় পথ নয়, ধর্মের সোজা পথে যখন আচার ও নিয়মের শত বাঁক নেয়, তখন কুসংস্কারের দেখা মেলে। জীবনযাত্রা হয়ে পড়ে অচল ও অসাড়। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় -” যে জাতি জীবন হারা অচল অসাড়, পদে পদে বাঁধে তারে জীর্ণ লোকাচার।

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার রচনা উপসংহার

কুসংস্কার মানুষকে বিপথগামী করে। আত্মবিশ্বাস, প্রগাঢ় ও বিজ্ঞানমনস্কতাই হল কুসংস্কার দূরীকরণের একমাত্র পথ।

নিচে কমেন্ট করে রচনাটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানাবেন। AnswerChamp সাইটটি প্রতিদিন ফলো করবেন এই ধরণের সুন্দর সুন্দর তথ্য বাংলায় পাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ।।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Balancing Financial Goals with Personal Happiness and Well-Being The Importance of Emergency Funds and How to Build One on a Budget 10 Tips on How to Plan and Enjoy Affordable Vacations and Travel Experiences 10 Thrifty Shopping Tips for Clothing, Furniture, and other Essentials 10 Strategies for Reducing Debt and Improving Credit Scores 10 Benefits of Living a Frugal Lifestyle 10 Creative Ideas for Budget-Friendly Meals and Recipes 10 Ways to cut Costs on Utilities and other Household Bills 10 Tips for Saving Money on Groceries and Household Expenses 10 Tips on How to Create a Budget Plan That Works for You